না গো, এই যে ধুলা আমার না এ, তোমার ধুলার ধরার 'পরে উড়িয়ে যাব সন্ধ্যাবায়ে। দিয়ে মাটি আগুন জ্বালি' রচলে দেহ পূজার থালি, শেষ আরতি সারা করে ভেঙে যাব তোমার পায়ে।
ফুল যা ছিল পূজার তরে, যেতে পথে ডালি হতে অনেক যে তার গেছে পড়ে। কত প্রদীপ এই থালাতে সাজিয়েছিলে আপন হাতে, কত যে তার নিবল হাওয়ায়-- পৌঁছোল না চরণ-ছায়ে।
এই তীর্থ-দেবতার ধরণীর মন্দির-প্রাঙ্গণে যে পূজার পুষ্পাঞ্জলি সাজাইনু সযত্ন চয়নে সায়াহ্নের শেষ আয়োজন; যে পূর্ণ প্রণামখানি মোর সারা জীবনের অন্তরের অনির্বাণ বাণী জ্বালায়ে রাখিয়া গেনু আরতির সন্ধ্যাদীপ-মুখে সে আমার নিবেদন তোমাদের সবার সম্মুখে হে মোর অতিথি যত। তোমরা এসেছ এ জীবনে কেহ প্রাতে, কেহ রাতে, বসন্তে, শ্রাবণ-বরিষনে; কারো হাতে বীণা ছিল, কেহ বা কম্পিত দীপশিখা এনেছিলে মোর ঘরে; দ্বার খুলে দুরন্ত ঝটিকা বার বার এনেছ প্রাঙ্গণে। যখন গিয়েছ চলে দেবতার পদচিহ্ন রেখে গেছ মোর গৃহতলে। আমার দেবতা নিল তোমাদের সকলের নাম; রহিল পূজায় মোর তোমাদের সবারে প্রণাম।